
“কিভাবে আপনি ইংরেজি শিখেছেন?” অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলার জন্য ৭টি প্রমাণিত কৌশল
Don’t write in English, they said, English is
Not your mother-tongue. Why not leave
Me alone, critics, friends, visiting cousins,
Every one of you? Why not let me speak in
Any language I like? The language I speak,
Becomes mine, its distortions, its queernesses
All mine, mine alone.
কথাগুলো বলছিলেন আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখিকাদের একজন, নাম কমলা দাস। নিজ মাতৃভাষা কিংবা তার জানা অন্যান্য ভাষা বাদ দিয়ে তিনি কেন অধিকাংশ সময় ইংরেজিতে লেখালেখি করেন সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন।
আমিও কখনো কখনো এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হই।
আমার মাতৃভাষা ইংরেজি নয়, তবুও আমি ইংরেজিতে কথা বলার এবং লেখালেখি করার সিদ্ধান্ত নিই।
এই আর্টিকেলে আমি আমার গল্পটি বলবো।
“আপনি কিভাবে ইংরেজি শিখেছেন?” আমি এখন এই প্রশ্নের উত্তর দিবো এবং এর সাথে সাথে আপনারা অনুসরণ করতে পারবেন এমন কিছু সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবধর্মী ধাপের কথা বলবো।
আপনাকে একজন ইংরেজি লেখক হয়ে যেতে হবে না, কিন্তু এই পরামর্শগুলো আপনাকে ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এমনকি এতে আপনি এই ভাষা শিক্ষার পদ্ধতিটি ভালোবাসতে শুরু করবেন।
Download: This blog post is available as a convenient and portable PDF that you can take anywhere. Click here to get a copy. (Download)
কেন আমি ইংরেজি শিখেছিলাম?
সংক্ষেপে এই প্রশ্নের উত্তর হলো: আমি নিরুপায় ছিলাম।
আমার দেশ ভারত প্রায় ২০০ বছর ইংরেজ উপনিবেশের অধীনে ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরও ইংরেজদের প্রণীত অনেক সাংবিধানিক কাঠামো আগের মতোই রয়ে যায়, যা আজও বহাল আছে। আমি যে স্কুলে পড়াশোনা করেছি সেটিও এরই অন্তর্ভুক্ত যেখানে ইংরেজি হচ্ছে পাঠদানের মাধ্যম (শ্রেণীকক্ষে ব্যবহৃত ভাষা)।
সরকারী স্কুলে যেখানে স্থানীয় ভাষায় পাঠদান করা হয় সেখানে পড়াশোনা না করে একটি বেসরকারি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়া ছিলো ব্যয়সাধ্য এবং এটিকে বিলাসিতা হিসেবে দেখা হতো। ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়ার অর্থ অন্য ভাষাগুলোকে ছোট করে দেখা নয় (অবশ্যই অন্য ভাষাগুলো ছোট নয়, যদিও ঔপনিবেশিক শাসন এই ধারণাটি স্থানীয় মানুষের মনে গেঁথে দিতে চেয়েছিলো) বরং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়া মূলত একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত।
এই কথাটি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে একশো কোটিরও বেশী মানুষ ইংরেজি ভাষা জানে এবং এটিই আন্তর্জাতিক ব্যবসা ও যোগাযোগের প্রধান ভাষা। ফলে ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়া কিংবা বাসায় বসে ইংরেজি শেখার সিদ্ধান্ত খুবই বাস্তবিক।
নির্দিষ্ট ক্লাস কিংবা পরিস্থিতি ছাড়া আমাদেরকে স্কুলে শুধুমাত্র ইংরেজিতে কথা বলতে হতো। যতই সময় পার হতে থাকে ততই আমি ইংরেজি ভাষায় মনের ভাব প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে থাকি। ইংরেজিতে গল্প লেখা ও বই পড়ার প্রতি ভালোবাসার কারণে আমি কলেজে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করি। অন্যদিকে, পড়াশোনার পাশাপাশি আমি বিনামূল্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরকে এই ভাষাতেই পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই।
বিভিন্ন ধরণের পরিবেশ থেকে আসা শিশুদের পড়াতে গিয়ে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুধাবন করি: একটি ভাষা জানলে, দেখা ও বাঁচার জন্য সম্পূর্ণ একটি পৃথিবীর দ্বার উন্মোচন হয়। আর যত বেশি ভাষা শেখা যায় ততই ভালো।
তবে হ্যাঁ, অনেকের জন্যই ইংরেজি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ এবং ব্যবহারিক ভাষাগুলোর মধ্যে একটি যা আয়ত্ত করা খুব সহজ, এবং এ ভাষা ভালোভাবে জানার অনেক সুফল রয়েছে।
আপনি কিভাবে ইংরেজি শিখেছেন? ৭টি কার্যকর ধাপে আমার ইংরেজি শেখার গল্প যা আপনি অনুসরণ করতে পারেন
আমি আমার স্কুলের দিনগুলোর কথা বলবো, যখন আমার বাবা-মা ও শিক্ষকগণ বিভিন্ন উপায়ে আমার মধ্যে শেখার জন্য আগ্রহ তৈরি করেছেন। এছাড়াও আমি বলবো কিভাবে আপনি আপনার নিজস্ব গতিতে ইংরেজি শেখার জন্য এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার এবং মডিফাই করতে পারবেন।
আপনি কি জানতে আগ্রহী?
তাহলে এই লেখাটি পড়তে থাকুন!
১. ইংরেজি এবং নিজ মাতৃভাষার মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে নেওয়া
আমি আগেও বলেছি আমার স্কুলে ক্লাসরুমে শুধুমাত্র ইংরেজিতে কথা বলার কঠোর নিয়ম ছিলো। তার মানে, আমার তিনটি ভাষা (আমার মাতৃভাষা বাংলা, আমার জাতীয় ভাষা হিন্দি এবং অবশ্যই ইংরেজি) জানা থাকার পরও আমি স্কুলে প্রায় সবসময় ইংরেজিতেই কথা বলতাম।
আমি একাধিক ভাষা জানার সুবিধা ইংরেজি শিখতে কাজে লাগাই। আমি আমার জানা বাংলা ও ইংরেজি শব্দগুলোকে ইংরেজি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে সহায়ক বানিয়ে ফেলি। যেসব বাংলা বা হিন্দি শব্দ কিংবা ফ্রেজ আমি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করতাম, আমি প্রথমে সেগুলোর ইংরেজি শব্দ বা ফ্রেজ খুঁজে নিই।
আপনি আপনার মাতৃভাষায় যেসব শব্দ নিয়মিত ব্যবহার করেন সেগুলোর ইংরেজি রূপ জানার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার ইংরেজি শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে তুলতে পারেন। একইভাবে, আপনার ব্যবহৃত কোনো ইংরেজি শব্দের বাংলা অর্থ জানা না থাকলে তা জেনে নিন। এভাবে ইংরেজি আপনার দৈনন্দিন জীবনের সাথে খুব সহজেই মানানসই হয়ে উঠবে এবং আপনি ইংরেজি শব্দগুলো সহজেই মনে রাখতে পারবেন। আপনি কোনো বাক্য ইংরেজি থেকে আপনার মাতৃভাষায় অথবা বিপরীতক্রমে অনুবাদ করার অনুশীলন করতে পারেন। এই অনুশীলন যেকোন পরিস্থিতিতে আপনাকে মনের ভাব সঠিকভাবে প্রকাশ করার জন্য প্রস্তুত করে তুলবে।
একাধিক ভাষা জানা থাকার ফলে আমি একই বিষয়বস্তু ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করতে পেরেছি। এটি আমাকে বিশ্বের বিচিত্র সকল সংস্কৃতি ও মানুষদের সম্পর্কে মুক্তমনা এবং আগ্রহী হতে উৎসাহিত করেছে। আমাদের পৃথিবীতে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে যোগাযোগ দিন দিন বেড়ে উঠছে, ফলে আপনি যত বেশী ভাষা আয়ত্ত করবেন তা আপনার জন্য তত সুবিধাজনক হবে।
অন্যদিকে, যদি আপনি দুই কিংবা তারও বেশী ভাষায় দক্ষ হন তাহলে মনে রাখবেন যে আপনি একজন ফুল-টাইম অনুবাদক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারবেন!
২. যত বেশী সম্ভব ভুল করেছি (নির্দেশনা দিতে পারবে এমন শিক্ষকের সামনে)
আমি এটা ভেবে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি যে আমার বেশ কয়েকজন শিক্ষক আমাকে ভুল করতে অভয় দিতেন। আমরা নিরাপদ এবং অনুকূল পরিবেশে বক্তৃতা প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, দলগত আলোচনা এবং ক্লাস প্রেজেন্টেশনে অংশ নিয়েছি। সকলের সামনে ইংরেজি বলার জন্য আমাদের প্রাথমিক প্রচেষ্টা পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করেনি, কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা এ বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠি।
উপরন্তু, আমাদের শিক্ষকরা যত্ন সহকারে আমাদের ভুলগুলো ধরিয়ে দিতেন। নির্দিষ্ট বিষয়বস্তুর জন্য তাঁরা আমাদেরকে সঠিক শব্দ নির্বাচনে সাহায্য করতেন এবং বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে দিতেন। তাঁরা আমাদেরকে মন খুলে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং আমরা কখনো কোনো শব্দ উচ্চারণে ভুল করলে আমাদেরকে ধরিয়ে দিতেন।
অন্য কথায়, শেখার সময় আমরা অগণিত ভুল করেছি, এবং সেই ভুলগুলোই আমাদের শিক্ষা প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। ভুল করার জন্য আমাদের কখনোই অপমানিত হতে হয়নি বা শাস্তি ভোগ করতে হয়নি। বরং ভুল করা সত্ত্বেও কেবল চেষ্টা করার জন্য আমরা পয়েন্ট পেয়েছি। কারণ অনর্গল কথা বলা শেখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হচ্ছে নিয়মিত অনুশীলন করা।
ইংরেজি শিখতে আগ্রহী হলে আপনার মধ্যেও এই মনোভাব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যর্থ হওয়ার জন্য এবং বেশী বেশী ভুল করার জন্য প্রস্তুত হোন।
নিজে নিজে শিখতে থাকা অবশ্যই চমৎকার, কিন্তু সম্ভব হলে ইংরেজি শেখার জন্য একজন পেশাদার শিক্ষক কিংবা পরামর্শদাতার সাহায্য নিন। স্থানীয় পর্যায়ে আপনাকে সাহায্য করার মতো কেউ না থাকলে আপনি অনলাইনে কাউকে খুঁজে নিতে পারবেন। শিক্ষকরা খুব দ্রুত আপনার ভুলগুলো শনাক্ত করে সেগুলো সংশোধনও করে দিতে পারবে। আপনি কতটুকু শিখতে পেরেছেন সে বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষের সাথে আপনার কথোপকথন আপনাকে খুব দ্রুত ইংরেজি শিখতে সাহায্য করবে।
অন্যদিকে, যদি আপনি ইতিমধ্যে কোনো ক্লাস বা স্টাডি গ্রুপের সদস্য হয়ে থাকেন তাহলে ক্লাসের কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করুন এবং অন্যদের সাথে নিয়মিত কথোপকথন চর্চা করুন। কখনোই ভুল করতে ভয় পাবেন না। দ্বিধাবোধ না করে ইংরেজি শেখায় মনোযোগী হয়ে উঠলে আপনার ভাষা এবং সামাজিক দক্ষতা দুটোই রাতারাতি বৃদ্ধি পাবে।
৩. একটি ভালো ডিকশনারি কেনা
বই পড়ার সময় আমি এমন অনেক শব্দ পেয়েছি যেগুলোর অর্থ আমার জানা ছিল না। ফলে আমি আমার বাবার কাছে শব্দগুলোর অর্থ জানতে চেয়েছি। কখনো কখনো তিনি শব্দগুলোর অর্থ বলে দিতে পারতেন। তবে অধিকাংশ সময়ই তিনি একটি ইংরেজি ডিকশনারির সাহায্য নিতে বলতেন। তার মতে ডিকশনারি হচ্ছে ঘরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই।
আমার বাবার একটি পুরোনো চেম্বারস ডিকশনারি ছিল। তিনি আমাকে দেখিয়েছেন যে শব্দগুলো কিভাবে বর্ণ অনুযায়ী সাজানো থাকে এবং কিভাবে একটি শব্দ ও তার অর্থ খুঁজে নিতে হয়। তিনি আমাকে বুঝিয়ে বলেছেন যে ডিকশনারি একটি শব্দের অর্থ বলার পাশাপাশি আরো অনেকভাবে আমাদের সাহায্য করে। শব্দের অর্থ ছাড়াও ডিকশনারিতে উচ্চারণ গাইড, শব্দের ইতিহাস, প্রতিশব্দ (একই অর্থের সমার্থক অন্যান্য শব্দ), বিপরীত শব্দ (একটি শব্দের বিপরীত অর্থবোধক শব্দ), উদাহরণমূলক বাক্য এবং আরো অনেক তথ্য থাকে।
কেবল ডিকশনারি পড়েই একজন মানুষ অনেক কিছু শিখতে পারে!
তাই, ডিকশনারি কেনা আপনার ইংরেজি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে উপযোগী এবং বাস্তবিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে। আমি আপনাকে আপনার বইয়ের তাক-এ একটি ডিকশনারি এবং দ্রুত রেফারেন্সের জন্য আপনার ফোনে একটি ডিজিটাল ডিকশনারি রাখার পরামর্শ দেবো। কখনো কোনো অপরিচিত শব্দ বা টার্ম দেখলে ডিকশনারির সাহায্য নিন।
আপনি নিজ থেকে নতুন নতুন শব্দ শেখার জন্যও ডিকশনারি ব্যবহার করতে পারেন। যেকোন একটি বর্ণ ধরে একটি নতুন শব্দ শিখে নিন অথবা যেকোন একটি পৃষ্ঠা খুলে পছন্দ অনুযায়ী একটি শব্দ বেছে নিন।
আপনি মজার মজার কিছু অনুশীলনীও বানিয়ে নিতে পারেন। যেকোন পাঁচটি শব্দ বেছে নিন এবং সেগুলো ব্যবহার করে একটি গল্প অথবা কবিতা লেখার চেষ্টা করুন। এর মাধ্যমে আপনি নিখুঁত কোনো গল্প বা কবিতা লেখার চেষ্টা করবেন না, বরং শব্দগুলো ব্যবহার করে খাতায় ব্যাকরণগতভাবে শুদ্ধ এবং যুক্তিসম্মত কিছু বাক্য লেখার চেষ্টা করুন।
৪. পড়াশোনা করার জন্য আনন্দদায়ক উপায় খোঁজা
স্কুলে আমরা গ্রামারসহ ভাষার মৌলিক বিষয়বস্তু শিখেছি, কিন্তু এগুলো একটি ভাষা শেখার জন্য যথেষ্ট নয়। আমরা সিনেমা দেখে দেখে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করেছি, অনেক কুইজে অংশ নিয়েছি, ক্লাসমেটদের সাথে শিক্ষণীয় খেলায় যোগ দিয়েছি এবং অনেক অনুশীলনী ও কার্যক্রমে অংশ নিয়েছি।
ভাষা শেখার জন্য একটি যুগোপযোগী ও সৃজনশীল পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরী। নিয়মিত গ্রামার অনুশীলন অথবা রচনা লেখা অধিকাংশ মানুষের জন্য তেমন কার্যকর প্রমাণিত হয় না। ইংরেজির মতো একটি কঠিন টপিক শেখার সময় সবাইকেই একটু একটু করে এগিয়ে যেতে হয়। অন্যথায়, অল্পতেই বিরক্ত হয়ে যাওয়া এবং শেখা বন্ধ করে দেওয়া খুব স্বাভাবিক।
অধিকাংশ শিক্ষকই এখনকার সময়ে ক্লাসরুমে অডিও-ভিজুয়াল শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করেন। খেলার ছলে নতুন কিছু শেখা দারুণ কার্যকর হয়।
একজন স্বনির্ভর শিক্ষার্থী হিসেবে আমি অনুধাবন করেছি যে মজার মজার সব ইংরেজি পাঠ বা কার্যক্রম আমার জন্য ইংরেজি শেখার প্রক্রিয়াকে খুব সহজ করে তুলেছে। শুরুতে নিজে নিজে অথবা আপনার স্টাডি পার্টনারের সাথে ভাষার খেলাগুলো খেলতে থাকুন। নিয়মিত ইংরেজি ক্রসওয়ার্ড পাজল সমাধান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন অথবা প্রতি সপ্তাহে আপনার পরিবারের সাথে ভাষা অনুশীলনের খেলা খেলুন। নতুন নতুন ধারণা পাওয়ার জন্য আপনি কিছু ওয়ার্ড গেমেও চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।
আপনার আগ্রহের বিষয়সমূহের সাথে সম্পর্কিত ইংরেজি ইউটিউব চ্যানেলগুলো নিয়মিত দেখুন। যেমন ধরুন যদি আপনি রান্না করতে পছন্দ করেন, তাহলে এমন একজন শেফকে ফলো করুন যিনি সব সময় ইংরেজিতে কথা বলেন। এতে করে, কেক বানানোর রেসিপি শেখার সাথে সাথে আপনি নতুন কিছু ইংরেজি শব্দও শিখে ফেলতে পারেন।
আপনি কি যেকোন ইংরেজি ভিডিও এর ভাষা সহজেই বুঝতে চান? FluentU অনেক নির্ভরযোগ্য ইংরেজি ভিডিও—যেমন সিনেমার ট্রেইলার, মিউজিক ভিডিও, অনুপ্রেরণাদায়ক বক্তৃতা এবং আরো অনেক উপকরণ সরবরাহ করে—এবং সেগুলোকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার উপযোগী ভাষা শিক্ষার পাঠে পরিণত করে।
প্রতিটি ভিডিও এর সাথে ইন্টার্যাক্টিভ সাবটাইটেল থাকে। যেকোন একটি শব্দ নির্বাচন করলে ভিডিওটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে থেমে যাবে এবং আপনাকে শব্দটির অর্থ দেখানোর পাশাপাশি তা মনে রাখতে সহায়ক ছবি দেখাবে এবং শব্দটির উচ্চারণ বলবে। আপনার দেখা শেষ হয়ে গেলে সবকিছু মনে করার জন্য আপনি ফ্ল্যাশকার্ড এবং অনুশীলনী পাবেন।
ন্যাটিভ স্পিকারদের পছন্দের মজার এই পদ্ধতি আপনিও ইংরেজি শেখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
ভিডিওগুলো তাদের প্রকার ও লেভেল অনুযায়ী সাজানো থাকে, ফলে আপনার জন্য মানানসই একটি ভিডিও খুব সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন। আপনি একজন নতুন শিক্ষানবিশ হিসেবে শেখা শুরু করতে পারবেন এবং FluentU ব্যবহার ও চর্চার মাধ্যমে ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলার মতো দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আপনি যেকোন সময় যেকোন স্থানে FluentU এর iOS অথবা Android অ্যাপ ব্যবহার করে ইংরেজি অনুশীলন করতে পারবেন।
৫. ইংরেজিতে গল্প লেখা এবং অভিনয় করা
আমার ছেলেবেলার প্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে একটি ছিলো একজন ভিন্ন মানুষের চরিত্রে অভিনয় করে আমার কাল্পনিক বন্ধুদের সাথে কথা বলা।
স্কুলে অবসর সময়ে আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে আমাদের প্রিয় কাল্পনিক চরিত্রের ভূমিকায় (কোন একটি দৃশ্যে) অভিনয় করতাম। তারও অনেক পরে, আমি Dungeons & Dragons এর মতো রোল-প্লেয়িং খেলায় এবং সহযোগী গল্প বলাতেও অংশগ্রহণ করেছি। এছাড়া, অনেকের মতোই আমার ছেলেবেলাতেও বাবা-মা আমাকে আমার প্রিয় রূপকথার গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়াতেন, যা আমার সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতিগুলোর একটি।
পরবর্তীতে গল্পের প্রতি ভালোবাসা আমাকে গল্প লিখতে এবং গল্প বর্ণনা করতেও সাহায্য করে। এতে শুধু আমার চিন্তা শক্তিই বাড়েনি, সাথে সাথে আমি উপস্থাপনা ও সাক্ষাতকারের জন্যেও প্রস্তুত হয়েছি।
বাচ্চাদের পড়ানোর সময় আমি সাধারণত তাদেরকে নিজের সম্পর্কে এবং তাদের পছন্দের বিষয়ে কথা বলতে উৎসাহিত করি। তারা তাদের চিন্তাগুলো বড়দের জানাতে পেরে খুশি হয়। তাদেরকে তাদের মতো করে নাটকীয় এবং সাবলীলভাবে কথা বলার সুযোগ দিলে তারা বেশি খুশি হয়।
গল্প বলা এবং ভাষা শেখা প্রাথমিকভাবে দুটি ভিন্ন বিষয় মনে হলেও আসলে এগুলো খুব আলাদা কিছু নয়। একটি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে হলে আপনার যথাযথ প্রকাশভঙ্গী ও যোগাযোগ ক্ষমতা থাকতে হবে। তাই নিজে গল্প লেখার চেষ্টা করুন, এমনকি তাতে নিজে নিজে অভিনয় করুন। অনুশীলনের জন্য অনলাইনে বা অফলাইনে একটি গ্রুপ তৈরি করুন এবং গ্রুপের সদস্যরা মিলে নিয়মিত ইংরেজি গল্পের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করুন।
হয়তো আপনি নিজে হতে চান এমন একটি আত্মবিশ্বাসী এবং সহজাত দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব (চরিত্র) তৈরি করে নিতে পারেন এবং আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সেই চরিত্রে অনুশীলন করতে পারেন।
যে সকল কার্যক্রমে দলগতভাবে কাজ করা যায় সেসব কাজের সর্বোচ্চ সুযোগ নিতে হবে। আপনি স্থানীয় থিয়েটার গ্রুপে যোগদান করতে পারেন, এতে করে আপনার অঙ্গভঙ্গি ও বাচনভঙ্গি আরো উন্নত হবে।
৬. ইংরেজিতে যা পড়তে ভালো লাগে তাই পড়া
আমি কোনো বিষয় নিজে নিজে শিখতে ও জানতে ভালোবাসতাম। আমি প্রায়ই ক্লাসে পড়ানোর আগেই কিছু অধ্যায় পড়ে ফেলতাম এবং কোর্সটি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে আমি অধ্যায়ের বাইরেও অনেক কিছু পড়তাম। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমি লেখালেখি বিষয়ে মনোযোগী হতে শুরু করি। আমি তখন সৃজনশীল ও প্রাতিষ্ঠানিক লেখালেখির পদ্ধতি সম্পর্কিত বই পড়তাম। পাশাপাশি আমি “30 Days to a More Powerful Vocabulary” এর মতো কিছু শব্দ শেখার বইও পড়তাম।
একইভাবে, বই পড়ার প্রতি আমার ভালোলাগা স্বাভাবিকভাবেই আমার শব্দভাণ্ডার ও বাক্য গঠন দক্ষতা বৃদ্ধি করে। বিভিন্ন ফিকশন পড়ার মাধ্যমে আমি ইংরেজি ভাষায় অতি সূক্ষ্ম তারতম্যও অনুধাবন করতে শিখি। এছাড়া নন-ফিকশন লেখালেখি পড়ার মাধ্যমে আমি নতুন অনেক চমৎকার বিষয় জানতে পারি এবং সেগুলো নির্ভুল ও যথাযথভাবে ইংরেজিতে প্রকাশ করতে শিখি।
অবশ্যই প্রত্যেকে Bookworm (যে বই পড়তে খুব ভালোবাসে, এক কথায় বইপ্রেমী) হয় না। তবুও আপনার পড়তে ভালো লাগবে এমন ইংরেজি বই খুঁজে পাওয়া খুব সহজ। বইগুলো পড়ে আপনিও আমার মতো মজার একটি উপায়ে আপনার অনুধাবন দক্ষতা বাড়াতে পারবেন।
উদাহরণস্বরূপ, বিশাল কোনো উপন্যাস দিয়ে আপনার পড়া শুরু করার প্রয়োজন নেই। একটি ইংরেজি কমিক বই অথবা হাস্যরসময় ইংরেজি বই দিয়ে পড়া শুরু করুন!
আপনি বাচ্চাদের ইংরেজি বইগুলোও দেখতে পারেন এবং সেগুলো পড়া শুরু করতে পারেন। আপনি যদি আকারে ছোট কিন্তু একটু পরিণত ধাঁচের কিছু গল্প পড়তে চান তাহলে এই সহজ ইংরেজি ছোটগল্পগুলো দেখতে পারেন।
ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে আপনি নতুন বা অ্যাডভান্সড স্পিকার যাই হোন না কেন, আপনার পছন্দ অনুযায়ী ইন্টার্যাক্টিভ রিডিং ম্যাটেরিয়াল খুঁজে পাওয়া কঠিন কিছু নয়। আপনি অসংখ্য শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইটে অনুধাবনমূলক অনুশীলনী খুঁজে পাবেন যা আপনি বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, যদি আপনি পড়ার প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে পারেন তাহলে এটি আপনার জীবনের জন্য অত্যন্ত কাজে আসবে।
৭. নিজেকে ইংরেজির সাথে যুক্ত রাখা
আমি এই কয়েক বছরে যা শিখেছি তা হলো: আপনি যদি সত্যিই কোনো বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে চান তবে তার সাথে আপনাকে সব সময় যুক্ত থাকতে হবে (সে বিষয়ে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে/তা চর্চা করতে হবে)।
আমি নিজেও রাতারাতি ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে উঠিনি। প্রকৃতপক্ষে, আমার বেশ কয়েক বছর সময় লেগেছে। আর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি কেবল আমার স্কুল, বাবা-মার সহায়তা, কিংবা উপরের কৌশলগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো না। বরং ইংরেজিতে অবিচ্ছিন্ন মনোযোগও আমাকে অনর্গল ইংরেজি বলা শিখতে সাহায্য করেছিল।
আমার মনে আছে যে আমি প্রতিদিন বিকালে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের খবর জানার জন্য বিবিসি শুনতাম। বিষয়টি আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। কেবল সংবাদ উপস্থাপকদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেই আমি আমার ইংরেজি উচ্চারণ ও বাচনভঙ্গি উন্নত করতে পেরেছি। একইভাবে, প্রতিদিন ইংরেজি সংবাদপত্র পড়া আমাকে রিপোর্ট রাইটিং এবং মনের ভাব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে। স্কুলে আমার হিস্ট্রি ক্লাস অনেকটাই পাশ্চাত্য সভ্যতার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে মনের অজান্তেই আমি ইংরেজি সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি।
আর সবশেষে, নতুন নতুন গল্পের বই কেনার জন্য আমার ক্রমাগত আবদার থেকে বাঁচতে আমার বাবা-মা আমাকে স্থানীয় ব্রিটিশ কাউন্সিল লাইব্রেরীর সদস্য করে দেয়। প্রতি সপ্তাহেই আমি নতুন নতুন বই পড়তাম। পাশাপাশি আমি অনেক ইভেন্ট এবং ওয়ার্কশপে অংশ নিতাম যেগুলো আমার ইংরেজিতে সামাজিক যোগাযোগ, স্পিকিং এবং রাইটিং স্কিল উন্নত করেছে।
সেই দিনগুলোর কথা মনে হলে আমি অনুধাবন করি যে আমি সে কাজগুলো ইংরেজি শেখার কথা মাথায় রেখে করিনি। বরং পৃথিবী সম্পর্কে আমার জানার আগ্রহ এবং ইংরেজি বই-পুস্তক ও কার্যক্রমে অংশ নেয়ার ইচ্ছার ফলস্বরূপ এমনিতেই ইংরেজিতে আমার দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সব সময় ইংরেজির সাথে যুক্ত থাকা আপনার জন্যও কার্যকর হতে পারে। শুরু করার জন্য আপনি বিবিসি এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে অনেক ভাষা শিক্ষা সহায়ক উপকরণ সংগ্রহ করতে পারবেন।
ইংরেজির সাথে যুক্ত থাকার প্রক্রিয়াটি অনেকটা জৈবিক প্রক্রিয়ার (প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা) মতো। এটিকে কখনোই পার্ট-টাইম শিক্ষা কার্যক্রম মনে করবেন না। অবসর সময়ে ইংরেজি ভাষার টিভি অনুষ্ঠান অথবা ইংরেজি সিনেমা দেখুন। সেগুলো প্রথমে সাবটাইটেলসহ এবং এরপর সাবটাইটেল ছাড়া দেখুন। লিরিক্সের প্রতি মনোযোগ দিয়ে ইংরেজি ব্যান্ডের গানগুলো শুনুন। এছাড়া ইংরেজি ভাষার পোডকাস্টগুলোও আপনার জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হবে।
আপনার জন্য কোন কৌশল সবচেয়ে ভালো হবে সেটা আপনিই সবচেয়ে ভালো বুঝবেন।
আপনার মনোবল দৃঢ় হয়ে থাকলে কোনো কিছুই আপনাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। হাতের কাছে ইন্টারনেট থাকার ফলে আপনি সবার জন্য সহজলভ্য আছে এমন অনেক শিক্ষা উপকরণ বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারবেন। তাই শেখার সময় সমস্যায় পড়লেও আশাবাদী থাকার চেষ্টা করুন এবং আপনার সাধ্যমতো চেষ্টা করতে থাকুন।
ইংরেজিতে দক্ষ হতে হয়তো আপনার কিছুটা সময় লাগবে। তবে একবার ইংরেজি ভাষা ভালো করে আয়ত্ত করলে বিভিন্ন কাজে সফলতা আপনার হাতের নাগালে চলে আসবে। খুব শীঘ্রই, “আপনি কিভাবে ইংরেজি শিখেছেন?” প্রশ্নের জবাবে ইংরেজি শেখার জন্য অন্যদের পরামর্শ দিতে পারবেন।
অর্চিতা মিত্র একজন ফ্রিল্যান্স লেখিকা, জার্নালিস্ট, এডিটর এবং এডুকেটর। আপনি নির্দ্বিধায় তার ব্লগ দেখতে পারেন এবং ফ্রিল্যান্সিং/শিক্ষামূলক অনুসন্ধানের জন্য তার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।